দেশে মাদকাসক্ত নারীর সংখ্যা আশগ্ধকাজনকহারে বাড়ছে। এমনকি বিভিল্পম্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরাও এই মরণনেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, দেশে প্রায় ৫০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। এদের ৯১ শতাংশই কিশোর ও তরুণ। এছাড়া দেড় লাখ কিশোরী-নারীও বিভিল্পম্ন ধরনের মাদকে আসক্ত। মাদক নিরসনে উদ্যোগী সরকারি ও বেসরকারি বিভিল্পম্ন সংস্ট্থা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মাদকাসক্তদের সঙ্গে আলাপ করে এবং নিজস্ট্ব অনুসল্পব্দানে নারী মাদকাসক্তদের সমঙ্র্কে তথ্য পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগল্পম্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, বদরুল্পেম্নসা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিসহ বিভিল্পম্ন উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার ছাত্রী মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।
মাদক নিয়ন্পণ অধিদফতরের সামঙ্্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের মাদকাসক্ত ৫০ লাখ মানুষের মধ্যে এক লাখের বেশি বসবাস করছেন ঢাকায়। এদের মধ্যে শতকরা প্রায় ১০ জন অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজারই হচ্ছে কিশোরী, তরুণী ও মহিলা। মাদকাসক্ত নারীর দুই-তৃতীয়াংশই স্ট্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এক্ষেত্রে ইংরেজি মিডিয়াম স্ট্কুল ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। যৌনকর্মীদের একটি বড় অংশও মাদকাসক্ত। কিছু গৃহবধহৃও রয়েছেন মাদকাসক্ত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কৌতূহল, পারিবারিক অশানস্নি, প্রেমে ব্যর্থতা, বল্পব্দুদের কু-প্ররোচনা, অসৎ সঙ্গ, হতাশা, আকাশ সংস্ট্কৃতির প্রভাবসহ নানাবিধ কারণে মেয়েরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। বিভিল্পম্ন সামাজিক প্রতিবল্পব্দকতার কারণে মাদকাসক্তদের মাত্র ৫ শতাংশ চিকিৎসা নিতে আসে।
ইউনিসেফের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের শতকরা ১৫ ভাগ নারী ধহৃমপান করে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর স্ট্বাস্ট্থ্য ও জনমিতিক জরিপে দেখা যায়, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের শতকরা এক ভাগ ধহৃমপানে আসক্ত। জাতিসংঘের এক জরিপে দেখা যায়, দেশের অনস্নত ৬৫ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে মাদকাসক্তির শিকার। তাদের মধ্যে ৮৭ ভাগ পুরুষ এবং ১৩ ভাগ নারী।
এছাড়া মাদকবিরোধী সংগঠন 'লাইফ' সমঙ্্রতি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হোসদ্বেলে থাকা ৪৬৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর ওপর এক জরিপ চালায়। এদের বয়স ১৫ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ১৩০। দেখা গেছে, হোসদ্বেলে থাকা এসব ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগই বিভিল্পম্নরকম মাদকে আসক্ত। সিগারেটে আসক্তদের মধ্যে শতকরা ৫৫ জন ছাত্র এবং প্রায় ৮ ভাগ ছাত্রী। অ্যালকোহলে আসক্ত প্রায় ১৪ ভাগ ছাত্র এবং ৪ ভাগ ছাত্রী। ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা ও বিভিল্পম্নরকম ঘুমের ট্যাবলেটে আসক্ত প্রায় ২ ভাগ ছাত্রী। চরস ও ভাং দিয়ে নেশা করে প্রায় ১২ ভাগ ছাত্রী। তবে রাজধানীতে তরুণী ও যুবা নারীদের হেরোইন গ্রহণের ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যায় সায়েদাবাদ সিটি পল্ক্নী, মোহাম্মদপুর বস্টিস্ন, মিরপুর পল্ক্নবীর বস্টিস্নতে। তথ্যানুসল্পব্দানে দেখা যায়, শুধু সায়েদাবাদ সিটি পল্ক্নীতে ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসেই নারী হেরোইনসেবী পাওয়া গেছে ৬৩ জন। এদের অধিকাংশেরই বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় মানসিক স্ট্বাস্ট্থ্য ইনসদ্বিটিউটের অধ্যাপক বিশিষদ্ব মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহিত কামাল বলেন, একজন মানুষের জন্য বিশেষ করে টিনএজ বা কৈশোর বয়স খুবই একটি 'রিস্টি্ক পিরিয়ড'। উঠতি বয়সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণেও অনেক সময় মেয়েদের মাদক গ্রহণ করতে দেখা যায়। আর মেয়েরা তুলনামহৃলকভাবে ছেলেদের চেয়ে বেশি আবেগপ্রবণ ও নরম মনের হয় বলে তাদের মানসিক প্রতিত্রিক্রয়াও হয় দ্রুত।
এদিকে মাদক নিরাময় কেন্দ্র নিউ মুক্তি ক্লিনিকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাদকাসক্তদের শতকরা ৯০ ভাগই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্টম্নাতক ও স্টম্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রী। বিশেষজ্ঞ ও মাদকাসক্ত কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারা সাধারণত ফেনসিডিল, হেরোইন, ইনজেকশন, গাঁজা, চরস, ভাং ও ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিল্পম্নরকম ট্যাবলেট গ্রহণ করে থাকে। তবে অধিকাংশ মেয়েই ফেনসিডিলকে পছন্দের তালিকায় এক নল্ফ্বরে রেখেছে। আলাপ করে জানা গেছে, ফেনসিডিলের সহজলভ্যতা এবং ব্যবহারের সুবিধাই এর মহৃল কারণ। এছাড়া শহরের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ধনী এলাকায় ইয়াবাসহ অন্যান্য দামি নেশাজাত দ্রব্যের সহজলভ্যতা মাদকাসক্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ বলে চিহিক্রত করেছেন মাদকাসক্তরাই। অন্যদিকে ঢাকা শহরের কয়েকটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র ও নেশাজাতদ্রব্য বিত্রিক্রর সঙ্ট ঘুরে স্ট্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া ছাত্রীদের মাদকদ্রব্য গ্রহণের আশগ্ধকাজনক চিত্র পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী বলেছেন, ফেনসিডিলের স্ট্বাদ মিষদ্বি। তাছাড়া খাওয়ার পর মুখে কোনোরকম গল্পব্দ থাকে না। আর হাতে পেতেও সুবিধা। তুলনামহৃলকভাবে দাম কম। এরপর রয়েছে বিভিল্পম্ন ট্যাবলেটের অবস্ট্থান। তবে ইয়াবা তুলনামহৃলকভাবে অনেক বেশি দাম হওয়ার কারণে ধনী ও বিত্তবান পরিবারের মেয়েরাই তা গ্রহণ করছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাই ইয়াবা বেশি খাচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞ ডা. মোহিত কামাল বলেন, বর্তমানে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া মেয়েরা বেশি মাদকে আসক্ত হচ্ছেন। জীবনকে উপভোগ করতে গিয়ে বল্পব্দুদের পাল্ক্নায় পড়ে তারা পা রাখছেন এই অল্পব্দকার জগতে। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অভিজাত এলাকার ইংরেজি মিডিয়াম স্ট্কুলের ছাত্রীদের মধ্যে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বলে গবেষণায় দেখা গেছে।
সমকালের সঙ্গে আলাপকালে মাদকাসক্তদের কেউ কেউ বলেছেন, নিছক শখের বশে 'টেসদ্ব' করতে গিয়ে ত্রক্রমেই বিভিল্পম্ন নেশার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন তারা। অধিকাংশ মেয়েই বলেছেন, তারা এই মাদকদ্রব্য পান ছেলে বল্পব্দুদের কাছ থেকে। তাছাড়া ইদানীং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনেকেই মাদক কেনেন। তারা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্দ্বর, মুহসীন হলের গেট, মধুর ক্যান্টিন এলাকা, টিএসসি, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের সামনের রাস্টস্নায় সল্পব্দ্যার পর থেকে বিভিল্পম্নরকম মাদক কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়া রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পেছনে চন্দনের খুপরি দোকান, বিএনপি বস্টিস্ন, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, পিলখানা গণকটুলি, তেজগাঁও রেল বস্টিস্ন-বাজার, এফডিসি গেট, খিলগাঁও রেল গেট, টিটিপাড়া, কমলাপুর রেলসদ্বেশনের পেছনের রাস্টস্না, শ্যামলী মেথর পট্টি, মিরপুর সদ্বেডিয়াম ও মাজার এলাকা, মিরপুর চিড়িয়াখানা এলাকা, ঢাকা কমার্স কলেজের সামনে, মিরপুর ১১ নং বিহারী পট্টি এবং পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার, বাবুবাজার, আলুবাজারের লোহার মার্কেটের পেছনেসহ বেশ কয়েকটি সঙ্টে মাদক কিনতে পাওয়া যায় বলে জানান তারা।
নেশাগ্রস্টস্ন কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে তারা কখনো কখনো চা-পান বিত্রেক্রতা ও টোকাইদের কাছ থেকে নেশাদ্রব্য কেনেন। প্রতি বোতল ভেজাল ফেনসিডিল বা ডাইলের দাম বর্তমানে ২০০ থেকে ২৮০ টাকা। আসল ফেনসিডিল প্রায়ই পাওয়া যায় না বলে জানান ছাত্রীরা। পেলেও দাম নেয় প্রায় হাজার টাকা। ভেজাল হেরোইন প্রতি পুরিয়া ৫০ থেকে ৮০ টাকা। মিক্সড গাঁজা ৫-১০ টাকা প্রতি সদ্বিক। ইয়াবা ট্যাবলেট প্রতিটি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। পাগল পশু শানস্ন করতে ব্যবহূত টিটিজেসি ইনজেকশন প্রতিটি ২০-৩০ টাকা এবং প্যাথেডিন ইনজেকশন ২০০-৩০০ টাকা। অবশ্য কোনটা কতটুকু আসল সে সমঙ্র্কে ত্রেক্রতা-বিত্রেক্রতা কেউই গ্যারান্টি দিতে পারে না বলে জানান তারা।
নিউ মুক্তি ক্লিনিকের প্রধান নির্বাহী মোঃ সানাউল হক বলেন, আজকাল মাদকেও ভেজাল হচ্ছে। এমনিতেই যে কোনো মাদকের পাশর্্বপ্রতিত্রিক্রয়া অত্যনস্ন ভয়গ্ধকর, তার ওপর এসব ভেজাল মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে আসক্তরা আরো ভয়গ্ধকর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ওই ক্লিনিকে কথা হয় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী ইন্দিরার (৩০) (ছদ্মনাম) সঙ্গে। চৌদ্দ বছর ধরে নানারকম মাদক সেবন করছেন তিনি। মাদকের কারণে দু'বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। প্রথমদিকে দীর্ঘদিন প্যাথেডিন নিয়েছেন। শরীরে তার এখন আর কোনো শিরা খুঁজে পাওয়া যায় না বলে বর্তমানে হেরোইন ও ইয়াবা খাচ্ছেন ইন্দিরা। বারিধারার এক বিত্তবান পরিবারের একমাত্র সনস্নান ইন্দিরা জানান, ১৯৯৫ সালে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে আমেরিকায় স্ট্থায়ী হয়ে গেলে মায়ের দুঃখ দেখে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম ফেনসিডিল খেতে শুরু করেন। তার ভাষ্য মতে, তারপর একদিন এক বল্পব্দু জানাল প্যাথেডিন নিলে দুনিয়া ভুলে থাকা যায়। তারপর থেকে একটানা ৪ বছর প্যাথেডিন নিয়েছেন। তিনি জানান, এক সময় প্রতিদিন তিনবেলা তাকে ৩০টি প্যাথেডিন নিতে হতো। প্রতিদিন খরচ হতো ১৫ হাজার টাকা। ১৬ বছরে মাদকের পেছনে তার খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এছাড়া বিভিল্পম্ন সময় ২ শ' ভরি স্ট্বর্ণালগ্ধকার বল্পব্দক দিয়েছেন মাদক কেনার জন্য। এখন প্রতি মাসে মাদকের পেছনে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকার ওপরে। ইন্দিরা বলেন, অনেক চেষদ্বা করেছি, ছাড়তে পারিনি। এক শ'বারেরও বেশি চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু তারপর আবারো মাদক নিয়েছি। একটি মাদকাসক্ত সনস্নান যে কীভাবে একটি পরিবারকে শেষ করে দেয় তার জ্বলনস্ন উদাহরণ আমি। তিনি জানান, তারা প্রায় ১৪/১৫ জন বল্পব্দু মিলে একসঙ্গে মাদক নেন। এর মধ্যে ৮ জনই মেয়ে। এদের সবাই রাজধানীর উচ্চবিত্ত পরিবারের সনস্নান। তাদের মধ্যে ৪ জন দেশের স্ট্বনামধন্য শিল্কপ্পপতির মেয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন ছাত্রী জানান, আড্ডার আসরে মজা করতে গিয়ে প্রথম গাঁজা খান। তারপর কখন যে আসক্ত হয়ে পড়েন বুঝতে পারেননি। এখন নিয়মিত হেরোইন আর ইয়াবা ট্যাবলেটও খান। প্রায় দুই বছর ধরে খাচ্ছেন। এই অভ্যাস ছাড়তে চান কিন্তু পারছেন না। শরীরও খারাপ হয়ে গেছে।
রাজধানীর একটি নিরাময় কেন্দ্রে কথা হয় এইচএসসি পড়ূয়া সীমির (ছদ্মনাম) সঙ্গে। সে বলে, বাবা-মার সঙ্গে ঝগড়া করে আমি প্রথম ফেনসিডিল খাই। এক বল্পব্দু আমাকে ফেনসিডিল এনে দেয়। তারপর থেকে এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। শেষ পর্যনস্ন বল্পব্দুরাই আমাকে সরবরাহ করে। কিন্তু এখন আর খেতে চাই না। আমি সুস্ট্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে চাই।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, সামাজিক বিশৃগ্ধখলা, নৈতিকতাহানি, আকাশ সংস্ট্কৃতির প্রভাব এবং পারিবারিক ও বিভিল্পম্ন হতাশার কারণে এই প্রজন্মের মেয়েরা বেশি মাদকাসক্ত হচ্ছে। হেরোইন ও ইয়াবার মতো ক্ষতিকর ও ভয়াবহ মাদকের সহজপ্রাপ্যতা এজন্য দায়ী। আগে হাসপাতালের আউটডোরে মাদকাসক্ত রোগী হাতে গোনা দু'চারজন পাওয়া যেত। আর বর্তমানে রোগীর সংখ্যা শতকরা ১০ ভাগের বেশি। এরা ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন কিংবা অন্যান্য মাদকে আসক্ত।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন সদ্বাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সমাজবিজ্ঞানী মাহমুদা ইসলাম বলেন, সাধারণত দেখা যায় কম বয়সের কারণে একে অন্যের কথায় বেশি প্রভাবিত হয়। আর আবেগ বেশি থাকার কারণে সহজেই যে কোনো বিষয়ে ভেঙে পড়ে। ফলে একটি নেতিবাচক পরিস্টি্থতিতে পড়লে তা থেকে নিজেকে আড়াল করতে গিয়ে অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। পারিবারিক অশানস্নি, বাবা-মার নেতিবাচক সমঙ্র্ক বা ব্রোকেন পরিবারের কারণেও অনেকে এ পথে চলে যায়। তবে গৃহিণী মেয়েদের মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে অনেক সময় দেখা যায় স্ট্বামীরা তাদের স্ট্পীদের মাদকাসক্ত করছে।
ডা. মোহিত কামাল জানান, মাদকাসক্ত মেয়েদের বিকলাঙ্গ সনস্নান জন্ম দেওয়ার আশগ্ধকা খুব বেশি। আসক্ত মেয়েরা পাইলসসহ নানারকম রোগে আত্রক্রানস্ন হতে পারে। তাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য অস্ট্বাভাবিক হয়ে পড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে মাদক সরাসরি মস্টিস্নষ্ফ্কে হামলা চালায়। অধিকাংশ নারী এক সময় যৌনত্রিক্রয়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, কেউবা মা পর্যনস্ন হতে পারে না। কোনো মেয়ে যদি গর্ভাবস্ট্থায় মাদক সেবন করে তাহলে তার সনস্নানেরও মাদকাসক্ত হওয়ার আশগ্ধকা থাকে।
তিনি আরো জানান, ফেনসিডিল বা হেরোইন নিয়মিত খেলে পরিপাকতন্প নষদ্ব হয়ে যায়। শরীরের রাসায়নিক ত্রিক্রয়া বাধাগ্রস্টস্ন হয়। মানসিক সুস্ট্থতা হারিয়ে যায়। ফলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাদকাসক্ত ব্যক্তি পাগলও হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে সিগারেট মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ। পরে এক ডোজ দুই ডোজ করে অন্য কোনো নেশা যোগ হয়। ত্রক্রমেই ডোজের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আর নেশারুদের অবস্ট্থাও খারাপ হতে থাকে। ত্দ্বক, ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ শরীরের অভ্যনস্নরীণ অর্গানগুলো আস্টেস্ন আস্টেস্ন নষদ্ব হয়ে যায়। তিনি জানান, মাদকাসক্তদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। এদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তবে ১৫ বছরের নিচের কিশোর-কিশোরী এমনকি শিশুরাও আজকাল মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের গড় বয়স মাত্র ২০ বছর।
মরণনেশায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
আর্কাইভ
-
▼
2008
(31)
-
▼
নভেম্বর
(26)
- মাত্র ১ ঘন্টায় টাক মাথায় চুল গজান: ঈদ উপলক্ষ্যে বি...
- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কি কি করবে?
- সামহোয়্যার ব্লগের প্রথম পাতা!!
- যুদ্ধাপরাধীদের স্বার্থেই মামলা!!
- সজীব ওয়াজেদ জয় : বাংলাদেশের এক ডালিমকুমার
- মরণনেশায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা
- ধূমপান প্রতিরোধে ৫শ মিলিয়ন ডলার দিলেন বিল গেটস ও ব...
- ওরা সবাই প্রতারণার শিকার!
- বাংলাদেশ । বিশ্বে আমরা কি পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই?
- ঋণের বেড়াজালে তৃণমূল নারী : তাহাদের দুঃখগাথা
- অর্ন্তবাস চোরের বংশধর !!
- আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রায় ৩ দিনের কথা
- মাতাল বিএসএফ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মা-শিশু হত্যার পা...
- এখন তারুণ্যের সময়: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
- চেন্জ উই বিলিভ: আমাদের দেশের রাজনীতিতেও আসছে ভিডিও...
- প্রতিবাদের খরচ দৈনিক মাত্র ১ লক্ষ টাকা
- যৌতুক চাওয়ার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন ...
- দেবদাস নেশা ছেড়েছে, আপনিও ছাড়ুন
- রাষ্ট্রদূতঃ যোগ্যতা, তৈলমর্দন না পিঠ বাচানোর জন্য?
- শেখ হাসিনাঃ আপনার অপেক্ষাতেই গোটা জাতি
- ওবামার বিজয়ের আনন্দে IELTS-এ বিশেষ ছাড়!!
- ই-প্রথম আলোঃ অনলাইনে বাংলা পত্রিকার নবতর যাত্রা
- একটি নোয়াখালীয় প্রেমের কবিতা
- দ্রুতগতির ফ্রি পিডিএফ রিডার
- ভিজিট করুন ব্লক করা সাইট
- ব্লগীয় দায়িত্বহীনতা এবং প্যাচালী
-
▼
নভেম্বর
(26)
আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতটুকু বাস্তবায়ন করবে?
আগামী নির্বাচনে কে জিতবে?
সাম্প্রতিক মন্তব্য
পোষ্ট ট্যাগ
- 1971 (1)
- 2008 (1)
- Abused (1)
- ads (3)
- AL (2)
- alo (1)
- article (1)
- bangla (2)
- bangladesh (14)
- bdr (1)
- bengali (1)
- bill (1)
- biography (1)
- block (1)
- blog (3)
- book (2)
- bsf (1)
- computer (1)
- crime (1)
- diary (2)
- drugs (1)
- e-book (2)
- e-prothom (1)
- economics (2)
- education (1)
- election (5)
- entertainment (2)
- fun (6)
- gates (1)
- generation (1)
- girls (1)
- Harassment (1)
- hasina (1)
- ielts (1)
- internet (4)
- iqbal (1)
- jafar (1)
- joy (1)
- killing (1)
- liberation (1)
- love (1)
- magazines (2)
- media (1)
- Mobile. Phone (1)
- movies (1)
- net (1)
- news (9)
- obama (1)
- paper (1)
- pc (1)
- pdf (1)
- pechali (1)
- personal (1)
- plant (1)
- poem (2)
- politics (7)
- protection (1)
- prothom-alo (1)
- proxy (1)
- security (1)
- sex (1)
- sexual (1)
- Sexually (1)
- smoking (1)
- soft (2)
- somewherein (1)
- tech (2)
- tips (1)
- war (1)
- web (2)
- women (3)
- young (2)
এই ব্লগে..
বাংলাদেশ: মানুষ, প্রেম, স্বাধীনতা, রাজনীতি, দারিদ্রতা আর সম্ভাবনার দেশ। সে দেশের কিছু বিষয়...মনের গভীরে আকি-বুকি কাটা ঘটনা আর অবসরের হাবিজাবি নিয়ে আমার এই ব্লগ।
যেকোন বিষয় নিয়ে মেইল করতে পারেন: bdidol@জিমেইল.কম
যেকোন বিষয় নিয়ে মেইল করতে পারেন: bdidol@জিমেইল.কম

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন