আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রায় ৩ দিনের কথা

২৪ নভে, ২০০৮ ·

২০০৩ এর ফ্রেব্রুয়ারী মাস। রাতের ট্রেনে চট্রগ্রাম থেকে ঢাকা যাচ্ছি চাকুরীর ইন্টারভিউয়ের জন্য। সাথে ছোট একটা লাগেজে কিছু কাপড়-চোপড়, সার্টিফিকেট আর ঠিকানা সম্ভলিত একটি ছোট ডায়রী।

ভোরের দিকে ভৈরব ক্রস করার পর ভাবলাম কিছ খাই। এদিক-সেদিক খুজে ডিমওয়ালা কে পেলাম। ৩ টাকা করে ছিল ডিম তখন। ৫ টাকার একটা নোট দিলে বিক্রেতা বললো ভাংতি নেই, দিয়ে যাচ্ছে। আমি বসে রইলাম তার অপেক্ষায়।

এর পরের ২ দিন কি হয়েছিল ভালো মনে নেই। ঝাপসা কিছু স্মুতি। এক লোক আমাকে অজ্ঞান অবস্হায় কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের মধ্যে পায়। সাথে আমার ব্যাগটি ছিল। আমার ঘড়ি, মোবাইল এবং ম্যানিব্যাগ লাপাত্তা। আমি নাকি ব্যাগের ডায়রী থেকে ওই ভদ্রলোককে একটি ঠিকানা দেখিয়ে দেই আগারগাওয়ের। আমার এক বন্ধুর ঠিকানা। সেই ভদ্রলোক ওই বাসায় পৌছে দেবার পর আমার বন্ধু, তার ভাই এবং বাবা মিলে ধরাধরি করে আমাকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইর্মাজেন্সী ভর্তি করার পর ফ্লোরে ফেলে রাখা হয়। আমার বন্ধর কাছ থেকে খোজ পেয়ে আমার এক আত্মীয় ডাক্তার এসে পেট ওয়াশ করান। রাত নাগাদ বন্ধুর বাসায় ফেরত আসি। পরদিন দুপুর নাগাদ চট্রগ্রাম থেকে আসা মামার সাথে আবার চট্রগ্রাম ফেরত আসি।

বাসায় যাবার পরও প্রায় ১ দিন পর্যন্ত কি হয়েছে কিছুই মনে নেই। আমার বন্ধু বলছিল অসুস্হ অবস্হায় নাকি আমি বলেছিলাম কেউ আমার মুখে কিছু ছুড়ে মেরেছিলাম। ডাক্তাররা বলেছিল সম্ভবত: ধুতরা পয়জন।

যে ভদ্রলোক আমাকে বাসায় পৌছে দিয়েছিল, তার নাম ঠিকান কোনদিন পাইনি। আমার সেই বন্ধুটির বাবাও ২০০৫ এর দিকে ক্যান্সারে মারা যায়। সষ্ট্রা তাদের ভালো রাখুন।

হয়ত হতে পারতাম এক বেওয়ারিশ লাশ। ব্যাগটা না থাকলে।

সৃষ্টিকর্তার কাছে সবার ভালো থাকা কামনা করি।

এই ব্লগে..

বাংলাদেশ: মানুষ, প্রেম, স্বাধীনতা, রাজনীতি, দারিদ্রতা আর সম্ভাবনার দেশ। সে দেশের কিছু বিষয়...মনের গভীরে আকি-বুকি কাটা ঘটনা আর অবসরের হাবিজাবি নিয়ে আমার এই ব্লগ।

যেকোন বিষয় নিয়ে মেইল করতে পারেন: bdidol@জিমেইল.কম

সাম্প্রতিক পোষ্ট

সামহ্যোয়ার ব্লগ পোষ্ট